স্টাডি বোরডম কাটাতে চাও?এই দশটি মুভি দেখে নাও!

0
439

স্কুলে সমানে বাড়ছে চাপ।এক্সট্রাকারিকুলার অ্যাক্টিভিটি, অ্যাসাইনমেন্টস, সামনের পরীক্ষা, ডেডলাইন সবমিলিয়ে নাজেহাল অবস্থা।পড়াশোনার চাপে মাথা যখন হ্যাং হওয়ার দশা তখন মাথাকে সঠিকভাবে কাজ করানোর জন্য অবশ্যই দরকার একটা ব্রেকের।আর সেই ব্রেক যদি হয় মুভি ব্রেক তাহলে তো শরীর,মন ও মস্তিষ্ক সবকিছুই হয়ে ওঠে চাঙ্গা।

কিন্তু সব সিনেমা দেখার মতোও হয় না ফলে ব্রেকটাইমে কোন মুভি দেখা যায় এটা ভাবতে ভাবতেই কেটে যায় অর্দ্ধেক সময়।শেষমেশ কোনো ফিল্মই আর দেখা হয়ে ওঠে না কারণ পড়ার সময় আবার এসে হাজির হয়ে যায়।তাই আজ আমরা ছাত্রছাত্রীদের দেখার জন্য নিয়ে এলাম দশটি অনুপ্রেরনা জাগানো, দারুন আকর্ষনীয় দশটি মুভি।যেইগুলো দেখে মুডতো ভালো হবেই সাথে শেখা যাবে অনেক কিছু।

Forrest Gump (1998)

পরিচালক-রবার্ট জেমেকিস

টম হ্যাংকস অভিনীত এই মার্কিন চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ১৯১৪ সালে।উইন্সটন গ্রুমের লেখা বই ‘ফরেস্ট গাম্প’-এর ওপর ভিত্তি করে বানানো হয়েছে এই মুভিটি।এই সিনেমায় দেখা যায় নীরিহ ,বোকাসোকা ফরেস্ট গাম্পের জীবনের বর্ণনা।সিনেমাটি শুরু হয় একটি বাস স্ট্যান্ডে এবং সেখান থেকে আসতে আসতে ফরেস্ট গাম্পের কন্ঠ থেকেই উঠে আসতে শুরু করে কীভাবে এই নীরিহ বোকাসোকা লোকটা আমেরিকার সমস্ত বড় বড় ঘটনার সাক্ষী হয়ে রয়েছে।এই সিনেমাটি আমাদের নীতিবোধ, মূল্যবোধ, পারিবারিক বন্ধনের শিক্ষা দেয় এবং এটা মানুষকে বুঝতে শেখায় যে সে যতই বড় হয়ে যাক একটা ছোটো শৈশব সবার মধ্যে জাগিয়ে রাখা প্রয়োজন।

The Social Network (2010)

পরিচালক- ডেভিড ফিঞ্চার

ডেভিড ফিঞ্চার পরিচালিত এই ছবিটি একটি জীবনীমূলক মার্কিন নাট্য চলচ্চিত্র।বেন মেজরিখের লেখা ‘দি অ্যাক্সিডেন্টাল বিলিয়নিয়ারস’ বইটির ওপর অবলম্বন করে বানানো হয়েছে মুভিটি। এই ফিল্মে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠা এবং তাকে ঘিরে গঠিত আইনিসমস্যাগুলিকে তুলে ধরা হয়েছে।ফেসবুক তৈরী পেছনের পুরো ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে এই সিনেমাটিতে।এই চলচ্চিত্রটি অনুপ্রেরনা জাগায় জীবনে লড়ে যাওয়ার জন্য।বড় হওয়ার পথে বাঁধা আসবেই কিন্তু সেই বাঁধাকে দূরে সরিয়ে  দৃঢ়তার সাথে নিজের লক্ষের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।  

Freedom Writers (2007)

পরিচালক-রিচার্ড লাগ্রাভেনেস

২০০৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত রিচার্ড লাগ্রাভেনেস পরিচালিত এই মার্কিন ছবিটি একটি শিক্ষকের গল্প বলে।এই সিনেমাটিতে শিক্ষকের সাথে ছাত্রছাত্রীদের সম্পর্ক সুন্দরভাবে উপস্থাপনা করা হয়েছে।এই সিনেমাটি এরিন গ্রুয়েলের লেখা ‘দ্য ফ্রিডম রাইটারস ডায়েরি’ থেকে নেওয়া হয়েছে।এরিন ব্যক্তিগত জীবনেও একজন শিক্ষিকা ছিলেন এবং নিজের অভিজ্ঞতার কথাই তিনি এই বইটিতে তুলে ধরেন।

Boyhood (2014)

পরিচালনা-রিচার্ড লিনক্ল্যাটার

রিচার্ড লিনক্ল্যাটার পরিচালিত এই মার্কিন নাট্য চলচ্চিত্রটি ২০১৮ সালে মুক্তি পেয়েছিল।এই সিনেমাটিতে একটি ছেলের গল্প দেখা যায়।ছেলেটির নাম ম্যাসন ইভানস জুনিয়ার।ছোটবেলায় মা-বাবার বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর ম্যাসন এবং তার বোন সামান্থা তার মায়ের কাছেই থাকতো এবং তাদের বাবা মাঝে মাঝে তাদের দেখতে আসতো।এই ছবিতে এই ম্যাসনের বেড়ে ওঠাই দেখতে পাই আমরা।বারো বছর ধরে আসতে আসতে ম্যাসন কীভাবে ঘটনাক্রমের মধ্যে দিয়ে বড় হতে লাগলো এই সিনেমায় আমরা সেটাই সেখতে পাই।

The Pursuit of Happiness (2006)

পরিচালক- গ্যাব্রিয়েল মুচিনো

২০০৬ সালে মুক্তি পাওয়া এই মার্কিন ছবিটি একটি সত্যিকারের জীবন সংগ্রামের ওপর ভিত্তি করে বানানো হয়েছে।এই ছবিতে আমরা ক্রিস গার্ডেনার নামক একটি ব্যক্তির কষ্টকর জীবনসংগ্রাম দেখতে পাই।স্ত্রী এবং এক ছেলেকে নিয়ে কোনোমতে তার জীবন চলে।প্রচন্ড কষ্টের মধ্যে দিয়ে চলতে চলতে অবশেষে ক্রিস একদিন সত্যিই ধনী হয়ে ওঠে।এই সিনেমা মানুষকে স্বপ্নপূরণ করার আশা যোগায়,সাহস যোগায় প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও লড়াই করার।এই ফিল্মটি সবার অবশ্যই দেখা উচিত।

Warrior (2011)

পরিচালক-গেভিন ওকোনার

গেভিন ওকোনার পরিচালিত মার্কিন ক্রীড়ামূলক এই সিনেমাটি মুক্তি পায় ২০১১ সালে।যারা খেলাধূলা ভালোবাসে তাদের জন্য এটি একটি বিশেষ আকর্ষনীয় সিনেমা।টান টান উত্তেজনার এই ছবিতে আছে দুর্ধর্ষ রেসলিং ম্যাচ।মার্শাল আর্ট সম্বন্ধে বিভিন্ন তথ্যও পাওয়া যায় এই সিনেমাতে।এই সিনেমার প্রধান চরিত্রের নাম হল টমি রিওরডান। সে তার বাবার কাছ থেকে মিক্সড মার্শাল আর্টসের ট্রেনিং নিয়ে পারদর্শী হয়ে ওঠে এই বিদ্যায়।সে নিজেকে তৈরী করে তোলে এক বিখ্যাত মার্শাল আর্ট কন্টেস্ট-এ যোগ দেওয়ার জন্য।তবে পরবর্তীকালে সে জানতে পারে এই কন্টেস্ট-এ তার বিপরীতে তার সাথে লড়তে চলেছে তার নিজের ভাই।টান টান উত্তেজনার এই সিনেমাটি ছাত্রছাত্রীদের ভীষণই ভালো লাগবে।

Everest (2015)

পরিচালক-বালতাজার কোরমাকুর

২০১৫ সালে মুক্তি পাওয়া এই মার্কিন সিনেমাটি একটি জীবনীমূলক রোমাঞ্চকর মুভি।সিনেমাটির প্রত্যেক পরতে পরতে লুকিয়ে আছে উত্তেজনা।এই সিনেমাটিতে দুজন পর্বতারোহীর এভারেস্টে ওঠার অভিজ্ঞতা দেখা যায়।তাদের এই এভারেস্ট জয়ের পথে বাঁধা হয়ে আসতে থাকে অনেক বিপদ।সেই বিপদগুলি কীভাবে তারা পেরিয়ে তাদের অভীষ্ট লক্ষে পৌঁছাতে পারবে বা আদৌ পৌঁছাতে পারবে কিনা সেই গল্পই বলে এই সিনেমাটি।অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীদের এই ছবিটি খুবই ভালো লাগবে।

The Great Debaters (2007)

পরিচালক-ডেনজেল ওয়াশিংটন   

সত্য ঘটনার ওপর বানানো ২০০৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবিটিতে আমরা পরিচালককেই অভিনেতার আসনেও দেখতে পাই।পুরো ছবিটির প্রত্যেক ধাপে বর্ণবাদ, নারী অধিকার, অসহযোগ আন্দোলন এই বিষয়গুলি উঠে এসেছে।ছবিটি সমাজের প্রতি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা প্রদান করে।

Stand and Deliver (1988)

পরিচালক- রেমন মেনেন্ডেজ

১৯৮৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই মার্কিন চলচ্চিত্রটিও একটি শিক্ষকের গল্প বলে।একজন শিক্ষক কিভাবে তাঁর ছাত্রদের নিয়ন্ত্রন করে তাদের পড়াশোনা করিয়ে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল আনালো সেই গল্পই দেখা যায় এই ছবিটিতে।শিক্ষক এবং ছাত্রদের সম্পর্কের ওঠাপড়ার মধ্য দিয়েই গড়ায় এই মুভিটির চাকা।প্রত্যেক শিক্ষক এবং ছাত্রদের এটি অবশ্যই দেখা উচিত।

The beautiful mind (2001)

পরিচালক-রন হাওয়ার্ড

২০০১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত রন হাওয়ার্ড পরিচালিত এই অসাধারন মুভিটি একটি অস্কার বিজয়ী সিনেমা।এই সিনেমার গল্পটিও একটি বিখ্যাত উপন্যাসের ওপর ভিত্তি করে বানানো হয়েছে।সিনেমাটি বিখ্যাত গণিতবিদ জন ন্যাশের জীবনের কথা বলে।একটি কাজের মধ্যে জন ন্যাশের সম্পুর্ন আত্মনিয়োগ এবং তাঁর ফলে কীভাবে তাঁর জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিসহ সেই গল্পই দেখা যায় এই অসাধারন সিনেমাটিতে।সিনেমাটি একটি মহান মানুষের গল্প ভীষণ সুন্দর ভাবে বলে। এই সিনেমাটি অবশ্যই ছাত্রজীবনে দেখা উচিত।

জীবনের সবচেয়ে সুন্দরতম অধ্যায় হল ছাত্রজীবন। এই ছাত্রজীবনকে তাই আরও সুন্দর ও সমৃদ্ধ করে তোলা উচিত সুন্দর সুন্দর চলচ্চিত্র দেখে।উন্নতমানের সৃষ্টি দেখলে জীবন ধারনের মানও আরও উন্নত হয়ে উঠবে।

অন্যান্য কোনো বিষয়ে আরও তথ্য জানতে হলে নিঃসংকোচে আমাদের জানান কমেন্টের মাধ্যমে। আমরা চেষ্টা করবো সঠিক তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরবার।

আপনাদের কাছে একটি অনুরোধ রইলো যদি আমাদের পোস্ট গুলো আপনাদের ভালো লেগে থাকে তবে আমাদের পোস্টটিকে লাইক ও শেয়ার করে সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিন ।

এছাড়াও অন্য বিষয়ে আরো নতুন নতুন তথ্য পেতে আমাদের ফেইসবুক ও ইনস্টাগ্রাম পেজ ফলো করুন ।

Leave a Reply