দুই প্রতিদ্বন্দ্বী স্মার্ট স্পিকার ‘অ্যামাজন ইকো’ এবং ‘গুগল হোম’-এর মধ্যে কোনটা হবে আপনার জন্য উপযুক্ত? দেখে নিন

0
420

টেকনোলজি যত উন্নত হচ্ছে গ্যাজেটও হয়ে উঠছে ততটাই স্মার্ট।বর্তমান যুগের দ্রুত জীবনযাত্রার সাথে পাল্লা দিতে স্মার্ট গ্যাজেটের প্রয়োজন আছে বই কি!সেইরকমই এখনকার যুগের স্মার্ট গৃহস্থালি সামলানোর জন্যও হাজির স্মার্ট হোম স্পিকার।আমাদের ঘরের নিত্য কাজের ব্যাপারে সাহায্য করা থেকে ঘরের মানুষদেরও বিনোদনেরও খেয়াল রাখে এই হোম স্পিকার।

বর্তমান টেকনোলজির বাজারে ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট সহ দুটি উন্নতমানের স্মার্ট হোম স্পিকার হলো ‘অ্যামাজন ইকো’ এবং ‘গুগল হোম’।এখন এই দুটি স্পিকার ফিচারস এবং স্পেসিফিকেশনস-এর দিক দিয়ে টেক্কা দেয় একে অপরকে।ফলতই এই দুটির মধ্যে কোনটা আপনার জন্য হবে উপযুক্ত তাই নিয়ে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয় মনের মধ্যে।আজ তবে অবসান হোক সেই দ্বন্দ্বের।দেখে নেওয়া যাক ‘অ্যামাজন ইকো’ এবং ‘গুগল হোম’ এই দুটি স্মার্ট হোম স্পিকারের মধ্যে কোনটি সবচেয়ে বেশী উপযুক্ত।

অ্যামাজন ইকো বনাম গুগল হোম-কে বেশি স্টাইলিস্ট?

অ্যামাজন ইকো কাজেও যেরকম স্মার্ট দেখতেও সেরকমই স্মার্ট ডিজাইনের।এই স্পিকারে দেখা যায় চারটি মেকানিক্যাল বাটন এবং এর ওপরে LED লাইটের একটি রিং দেখা যায় যা এই স্পিকারের লুক-কে আরও স্মার্ট করে তোলে।

তবে স্টাইলের দিক থেকে গুগল হোমও অ্যামাজন ইকোর যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী।গুগল হোম-এ ঘরের সাথে মানিয়ে যাওয়ার মতো একটি ঘরোয়া লুক পাওয়া যায়।গুগল হোম সাদা এবং ধূসর এই দুটি রঙেই পাওয়া যায়।এই স্মার্ট স্পিকারের নীচের অংশটি খোলা যায় এবং সেটি কাপড়ে মোড়া থাকে।গুগল হোম-এ একটি টাচ প্যানেল আছে এবং আছে চারটি LED লাইটের উপস্থিতি যা ভিস্যুয়াল ফিডব্যাক দিতে সাহায্য করে।অ্যামজন ইকোর থেকে গুগল হোম একটি বিষয়ে আলাদা।গুগল হোম-কে নিজের প্রয়োজন মত টাচ প্যানেলে হাল্কা টাচের মাধ্যমে সায়েলেন্ট করে দেওয়া যায় ,এই ফিচারটি অ্যামাজন ইকোতে অবর্তমান। 

অ্যামাজন ইকো বনাম গুগল হোম-স্পেসিফিকেশন

গুগল হোম এবং অ্যামাজন ইকো এই দুটি স্মার্ট স্পিকারেই আছে ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট-এর সুবিধা।গুগল হোমের ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট হলো গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং অ্যামাজন ইকোর ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট হলো অ্যালেক্সা।এই দুটি ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টই ভয়েস কম্যান্ড অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম।

ওয়াইফাই কানেকশনের মাধ্যমে এই দুটি হোম স্মার্ট স্পিকারকে সেট আপ করাও সহজ ব্যাপার।

তবে স্পেসিফিকেশনের দিক থেকে অ্যামাজন ইকো ডট পেছনে ফেলে দিয়েছে গুগল হোম কে। অ্যামাজন ইকো ডট-এর ‘স্কিল’ ফিচার তৃতীয় পক্ষ অ্যাপ্লিকেশনকেও কাজ করতে অনুমতি দেয়।অ্যমাজন ইকো ডটের মাধ্যমে ক্যাব বুক করা, খাবার অর্ডার করা এবং হোটেল বা ফ্লাইট বুক করা ইত্যাদি সহজেই করা সম্ভব হয়।

এইসব দিক দিয়ে অ্যামাজন ইকো ডট টেক্কা দিয়ে দিয়েছে গুগল হোম কে।

অ্যামাজন ইকো বনাম গুগল হোম-সাউন্ড কোয়ালিটি এবং কর্মক্ষমতা

সাউন্ড কোয়ালিটির দিক থেকেও এক পা এগিয়ে অ্যামাজন ইকো ডট।অ্যমাজন ইকো ডটে আছে সাতটি মাইক্রোফোন যেখানে গুগল হোমে মাত্র দুটি মাইক্রোফোনের উপস্থিতি।

দুটি স্মার্ট স্পিকারই ভয়েস কমান্ড অনুসরণ করে বিভিন্ন অনলাইন সংগীত স্ট্রিমিং অ্যাপ থেকে গান চালাতে সক্ষম।

এই দুটি স্মার্ট হোম স্পিকারই ব্লুটুথ স্পিকার হিসাবে কাজ করতে সক্ষম।

অ্যামাজন ইকো বনাম গুগল হোম-মূল্য

মূল্যের দিক থেকে অ্যমাজন ইকো ডটে পাওয়া  যায় অনেক ধরনের বিভিন্নতা।সবচেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যের অ্যামাজন ইকো ডট থার্ড জেনারেশনের মূল্য হল ৩,৪৯৯ টাকা।এছাড়াও ইকো প্লাস স্মার্ট স্পিকার পাওয়া যায় ১৪,৯৯৯ টাকায়, অ্যামাজন ইকো থার্ড জেনারেশন পাওয়া যায় ৯,৭৪৯ টকায় এবং সবচেয়ে অত্যাধুনিক প্রকারটি হলো ইকো স্পট যেটিতে আছে আলেক্সা ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টের সাথে আকর্ষণীয় অ্যালার্ম ক্লকের ফিচার এবং সেটি পাওয়া যায় ৬.৪৯৯ টাকায়, এই স্পিকারে একটি স্ক্রিনও বর্তমান।

গুগল হোমের মূল্যের দিক দিয়ে পাওয়া যায় দুটি প্রকার।গুগল হোমের দাম হলো 7,999 টাকা এবং গুগল হোম মিনির দাম হলো 2,999 টাকা।

এছাড়াও বর্তমানে অ্যামাজন ও ফ্লিপকার্ট-এ 6ই ও 7ই আগস্ট তারিখে হতে চলেছে দূর্দান্ত সেল এবং সেই সেল-এ এই দুটি ডিভাইসই আপনি পেয়ে যাবেন অবিশ্বাস্য কম দামে। সুতরাং এটা বলাই যায় এই দুটি স্মার্ট হোম স্পিকারই যথেষ্ট বাজেট মূল্যের মধ্যেই সহজলভ্য।

শেষমেশ বলা যেতে পারে গুগল হোম অ্যামাজন ইকো ডটের থেকে বেশী কম্প্যাক্ট এবং এর সাউন্ডও অ্যমাজনের থেকে যথেষ্ট ভালো।এছাড়াও গুগলের ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট-এর সাথে কথোপকথন বেশি প্রাকৃতিক লাগে অ্যামজন ইকো ডটের অ্যালেক্সার থেকে।কিন্তু ফিচারের দিক থেকে অবশ্যই সবসময় অ্যামাজন ইকো ডটই এগিয়ে থাকবে।

এই স্মার্ট হোম স্পিকারগুলোর দাম পাঠকের সুবিধার্থে আমরা এখানে উল্লেখ করে দেওয়া হলো। তবে এটা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে বিভিন্ন অনলাইন স্টোরে এই স্পিকারের দাম সময় পরিবর্তনে হেরফের হয়।

আপনার কি মনে হয়?আপনার মতামত অবশ্যই আমাদের জানান কমেন্ট সেকশনের মাধ্যমে এবং লাইক ও শেয়ার করে পোস্টটিকে ছড়িয়ে দিন সকলের মাঝে।টেকনোলজি সম্বন্ধিত আরও খবর জানতে চোখ রাখুন টুকিটেকের ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া পেজে। 

Leave a Reply