সেল্ফ-ড্রাইভিং কার সম্বন্ধে জানুন পাঁচটি রোমাঞ্চকর তথ্য!

0
1066

টেকনোলজি যত এগোচ্ছে তত আমাদের জন্য নিয়ে আসছে নতুন নতুন চমক। দিন যত এগোচ্ছে মানুষের মস্তিষ্ক আরও বেশী উর্বর হয়ে উঠছে আর তার থেকে সৃষ্টি হচ্ছে সারা বিশ্বে সারা জাগানো বিভিন্নরকমের আকর্ষণীয় স্মার্ট গেজেটস। যুগের সাথে সাথে আধুনিক থেকে আধুনিকতর হচ্ছে জগত, আর গাড়ি থেকে মোবাইল প্রত্যেকটি গেজেটই হয়ে উঠছে স্মার্ট।

সেই স্মার্ট দুনিয়ারই এক অভূতপূর্ব আবিষ্কারই হল সেল্ফ-ড্রাইভিং কার। যদিও পুরোপুরি ভাবে এই গাড়ি এখনো রাস্তায় নামে নি, তবুও প্রায় তৈরী হয়ে এসেছে এই গাড়ি ভবিষ্যতে রাস্তায় রাজ করার জন্য। এই গাড়িকে পরিচালনা করার জন্য চালকের আর দরকার পরে না এই গাড়ি নিজেই সঠিক ভাবে চালিত হতে পারে। আপনি নিশ্চিন্ত মনে গাড়ি চালানোর সমস্ত দায়িত্ব গাড়ির ওপরই ছেড়ে দিয়ে পৌঁছে যেতে পারবেন নির্দিষ্ট গন্তব্যে।এই গাড়ি নিজেই রাস্তা নির্ধারণ করে নির্ভুল ভাবে আপনাকে পৌঁছে দেবে আপনার গন্তব্যে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার এই গাড়িতে অ্যাক্সিডেন্ট হওয়ার সম্ভবনা বলতে গেলে প্রায় শূন্য।

এছাড়াও এই গাড়ি সম্পূর্ণ ভাবে বাজারে এসে গেলে বিশ্বের সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সর্বোপরি পরিবেশের ওপর বিস্তরভাবে প্রভাব বিস্তার করবে। যেহেতু এই গাড়ি সম্পূর্ণভাবে ব্যাটারি-চালিত হবে তাই পরিবেশ দূষনের মাত্রা কমাতেও এটি সাহায্য করবে। এখন দেখে নেওয়া যাক এই সেল্ফ-ড্রাইভিং কারের পাঁচটি চমকপ্রদ তথ্য।

স্টিয়ারিং হুইল ছাড়াই চলবে গাড়ি

আপনি গাড়িতে আরাম করে চড়ে বসবেন আর গাড়ি নিজেই নিয়ে যাবে আপনাকে আপনার কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে, ঠিক তাই – এই স্বপ্নই এখন পূরণ হতে চলেছে আপনার। এই সেল্ফ-ড্রাইভিং কার যেহেতু নিজেই নিজেকে চালিত করে তাই প্রয়োজন পরে না কোনো স্টিয়ারিং হুইলের। এমনকি এক্সেলেটর এবং ব্রেকের ও প্রয়োজন পড়ে না এই গাড়িতে, কারণ সেটিও সে নিজেই নিয়ন্ত্রন করে। গাড়িতে এই অংশগুলো না থাকার ফলে গাড়ির ভেতরে জায়গার বৃদ্ধি ঘটেছে গাড়িটিও হয়ে উঠেছে অনেক বেশী আরামদায়ক। এছাড়াও গাড়িতে এই বস্তুগুলো না থাকায় যে জায়গার আধিক্য ঘটেছে তার ফলে এই গাড়িতে আরও বেশী ফিচারস যুক্ত করা আরও বেশী সহজ হয়ে উঠবে। তবে বর্তমানে একটি সেল্ফ-ড্রাইভিং কার-এ যে সুবিধাগুলি পাওয়া যায় সেইগুলি হল স্টার্ট এবং স্টপ বাটন, প্যাসেঞ্জারের জিনিসপত্র রাখার জন্য যথেষ্ট জায়গা, দুজনের বসার সিট সিটবেল্টসহ, এবং সামনে থাকে একটি স্ক্রিন ডিসপ্লে যেখানে দেখা যাবে এই গাড়িটি গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য কোন রুট গ্রহণ করবে।

এই ফিচারগুলি গাড়ি ছাড়াও দেখা যাবে অন্যান্য যানবাহনেও     

শুধুমাত্র নিজস্ব গাড়িতেই নয় ভবিষ্যতে এইসব উন্নত ফিচার গুলি দেখা যাবে অন্যান্য যানবাহনেও। ভবিষ্যতে আমাদের ভালো পরিষেবা দেওয়ার জন্য ট্রাক্টর, কার্গো ট্রাক, লড়ি ইত্যাদিতেও আমরা এই উন্নতমানের ফিচারগুলি দেখতে পাবো।বিদেশের কিছু কিছু শিপিং কোম্পানি ইতিমধ্যেই এই অত্যাধুনিক টেকনোলজি ব্যবিহার করা শুরু করে দিয়েছে। তবে সবকিছুতেই কিছু না কিছু অসুবিধা থাকবেই যেমন এতকিছু আধুনিক ফিচার থাকা সত্ত্বেও এত সুবিধা পাওয়া সত্ত্বেও কিছু কোম্পানি এই নতুন টেকনলজি ব্যবহার করতে চাইবে না। তারা চিরাচরিত পুরোনো পন্থাই ব্যবহার করে যাবে।

অত্যাধুনিক জিপিএস ও স্যাটেলাইট নেভিগেশন সিস্টেমের সুবিধা   

সেল্ফ-ড্রাইভিং কার-এ উপস্থিত থাকবে উন্নতমানের জিপিএস ও স্যাটেলাইট নেভিগেশন সিস্টেম যার মাধ্যমে এই গাড়ি নিজেই নিজের রাস্তা নির্বাচন করে চলতে পারবে। তবে এই সিস্টেমকে আরও আধুনিক বানানো হয়েছে| স্পেশাল ক্যামেরা, লেসার এবং রিডার সেন্সর ব্যবহার করে যাতে অ্যাক্সিডেন্টের হাত থেকে এড়ানো যায় এই গাড়িকে। চালক-বিহীন এই গাড়ি এমনকি রাস্তায় চলা অন্য গাড়ি, সাইকেল চালক,  পথে হাঁটা মানুষ, গাছ এইগুলিকে আলাদা আলাদা করে চিনতে পারার ক্ষমতা রাখে। এছাড়াও এই গাড়ি ৫০০ ফুট দূরত্ব অবদি নজর রাখতেও সক্ষম| শুধু তাই নয় এই গাড়ি নির্ভুলভাবে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে পারে।

বিদায় করুন অ্যাক্সিডেন্টের দুশ্চিন্তা      

গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বেরোলে মাথায় সবচেয়ে বেশী যেই চিন্তাটি ঘোরে সেটি হল দূর্ঘটনার চিন্তা। ভীষণ সাবধানে গাড়ি চালালেও বিভিন্ন কারণে ভয়ানক দূর্ঘটনা ঘটেই যায়। তবে এই সেল্ফ-ড্রাইভিং কারে সেই ভয় আর নেই। বেশীরভাগ দূর্ঘটনার কারণ যদি আমরা দেখি তাহলে দেখিতে পাবো সাধারণত ড্রাইভারেরই কোনো ত্রুটির কারণে ঘটে গেছে সেই অ্যাক্সিডেন্ট। এই গাড়িতে নেই সেই ভয় এর কারণ| এই গাড়ি ড্রাইভার বিহীন এবং এই গাড়ির ডেভেলপাররা অনেক গবেষণা করে উন্নত থেকে উন্নতর টেকনলোজি ব্যবহার করেছেন এই গাড়ির সেফটির কথা মাথায় রেখে। এছাড়াও লক্ষ বারের বেশীও এই গাড়িকে সব পরিস্থিতিতে রাস্তায় চালিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে এবং প্রত্যেক বারই এটি সফল হয়েছে। ভবিষ্যতেও এটি বাজারে আসার পূর্বে আরও অনেক পরীক্ষা হবে এবং এই সেল্ফ-ড্রাইভিং কার হয়ে উঠিবে ভবিষ্যতের সবচেয়ে বিপদমুক্ত গাড়ি।

অন্ধকারেও আলোর উৎস এই গাড়ি     

এই সমস্ত দুর্দান্ত ফিচার ছাড়াও সবচেয়ে অবাক করা এই গাড়ির ফিচার হল অন্ধকারেও সম্পূর্ণ নির্ভুলভাবে চলতে সক্ষম এই গাড়ি। এই গাড়ির নির্মাতাদের প্রথম লক্ষ ও উদ্দেশ্যই হল এই গাড়ির সেফটির দিকে বিশেষ নজর দেওয়া। উন্নত টেকনোলজি ব্যবহার করে তাই তারা ধীরে ধীরে এই সেল্ফ-ড্রাইভিং কারকে বানিয়ে তুলছেন আরও বেশী নির্ভরযোগ্য ও সুরক্ষিত। এই গাড়ি সত্যই অন্ধকারে আলোর উৎস দেখাতে চলেছে ভবিষ্যতে।

মানুষ জীবকুলের সর্বোন্নত জীব, আর সেটিই বার বার প্রত্যেক পদে প্রমান করে, নিত্য নতুন এই দূর্দান্ত সব টেকনলজি আবিষ্কারের মাধ্যমে। বর্তমান জগত স্মার্ট গেজেটের ওপর এতটাই নির্ভরশীল যে মেশিন ছাড়া একটি দিনও কল্পনা করা মুশকিল। যদিও আমরা এটাও জানি মেশিন যতই উন্নত হোক মানুষের মস্তিষ্ককে টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই, তারা শুধুমাত্র আমাদের জীবনকে একটু সহজ করতেই সক্ষম এবং ভবিষ্যতেও মানু্ষের মস্তিষ্ক প্রসূত আরো অসাধারণ টেকনোলজি আসবে নতুন চমক দিতে আমরা আছি অপেক্ষায়।

Leave a Reply